বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ

অর্থনীতি ডেস্ক : দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর পরিচালনায় নতুন কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নতুন কর্তৃপক্ষের অধীনে বন্দরটি পরিচালিত হলে বন্দরের কার্যক্রমে গতি আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন কল্পে ৩০ নভেম্বর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজন করে এই বৈঠকের। সেখানে অর্থমন্ত্রণালয় সহ কাস্টমস, বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বৈঠকে অংশ নেওয়া বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠিত হতে যাচ্ছে। যত দ্রুত মাতারবাড়ি বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন করা যায় এই বিষয়ে নির্দেশনা আছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন কর্তৃপক্ষ গঠন করা যায় বলে আশা করা হচ্ছে।” মাতারবাড়ি বন্দরের কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগেই এই কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি গঠিত হলে নতুন জনবল নিয়োগের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বন্দর উন্নয়ন কাজ শুরুর টেন্ডার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পথে।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। নতুন কর্তৃপক্ষ গঠিত হলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে আর টাকা অর্থায়ন করতে হবে না। যে টাকা ব্যয় হয়েছে, সেটি মাতারবাড়ি বন্দরের কাছে ঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন কর্তৃপক্ষ গঠিত হলে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হবে। কমে আসবে পরিচালন ব্যয় ও সময়; সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাতারবাড়ি বন্দরের দূরত্ব সমুদ্রপথে ৩৪ নটিক্যাল মাইল। এই দূরত্ব পাড়ি দিয়েই চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা বন্দর নির্মাণ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ্‌ বলেন, “মাতারবাড়ি বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ গভীর সমুদ্রবন্দর যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এই বন্দর নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। তাই পৃথক বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন সময়ের দাবি। সরকারের নতুন বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠনের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হবে।”

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালের অধীন ৫টি কর্তৃপক্ষ রয়েছে। এই কর্তৃপক্ষগুলো হচ্ছে– চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬ষ্ঠ কর্তৃপক্ষ হিসেবে মাতারবাড়ি গভীর বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন হতে যাচ্ছে।

গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাতারবাড়ী বন্দরের ১৪.৩ কিলোমিটার নেভিগেশন চ্যানেলের উদ্বোধন করেন এবং বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রতিষ্ঠার পর এটি মাতারবাড়ী বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেল বলেন, আগামী বছরের শুরুতে প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হবে; এটি শেষ হবে তিন বছরের মধ্যে।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888